স্বার্থপর পরী গল্প ৮
স্বার্থপর পরী গল্প
পর্ব- ৮
-
পরের দিন সকাল ৭ টা ঘুম থেকে উঠলাম,মিথিলার ফোন এখন ও বন্ধ
।উঠে খুব দ্রুত রেডি হয়ে কলেজের উদ্দেশ্য রওনা দিলাম।যাওয়ার পথে দেখি মিথিলা রাস্তায় অপেক্ষা করছে আমাকে দেখে মুখ ভেংচি কেটে গাড়িতে উঠলো না।যাইহোক পরে তো আসবে আর কলেজে আসলে কি করে রাগ করে থাকে দেখবো।তারপর কলেজে চলে গেলাম।
সাগর দেখি অনেক সকালেই কলেজে বসে আছে।আমাকে দেখে সাগর অবাক।
-
সাগর-কিরে তুই এতো সকালে ৯ টার আগে কলেজে আমি তো ভাবছি তুই ১০ তার পরে আসবি।
আমি-সালা তোমার লুচ্চামি আজকে বের করবো (কয়েকটা মাইর দিলাম)।
সাগর-আরে মারিস কেন কি হইছে।
আমি-তুই যদি লুচ্চামি না করতি,তাহলে তোর আর মায়ার ঝগড়া হতো না,তাহলে তোদের ঝগড়া ঠিক করার জন্য আমার কথাও বলতে হতোনা।আর সেই জন্য আমার পরী টা রাগ ও করতোনা।
সাগর-মানে রাগ করছে কেন কি হয়েছে।
আমি-যখন তুই ফোন দিলি তখন মিথিলার সাথে মেসেজে কথা বলছিলাম পরে আমি মায়াকে কল দিলাম তোর সাথেও কথা বললাম,আবার আম্মু খাইতে ডাকছিল আমার খেয়াল ছিল না পরে দেখি ৩ টা মেসেজ আর কল দিয়ে ওয়েটিং পাইছে রাগ করে ফোন বন্ধ করে রাখছে।
সাগর-হাহাহা চল ক্লাসে বসি।
আমি-একদম হাসবিনা সব দাত তোর ফেলে দিবো সালা লুচ্চা হারামি।
সাগর-আচ্ছা তো আমার জন্য কি করবি ভাবছিস মায়া কে কি বলবি।
আমি-তোর জন্য ভাবছি মায়াকে বলবো তোর মতো লুচ্চাকে ছেড়ে দিতে,আগে আমার পরীর রাগ ভাংতে হবে।
সাগর-প্লিজ দোস্ত এমন টা করিস না আমার কি হবে,চল দেখি ভাবি আসছে নাকি।
আমি-সে তো আমাকে দেখে রাস্তায় গাড়িতেও উঠল না,চল দেখি।
-
১১ টা বেজে গেছে কোন খোজ নাই।পরে মিথিলার ফ্রেন্ড নুসরাতের কাছে গেলাম।
আমি-হাই আপু কি আবস্থা কেমন আছো?
নুসরাত-জি ভাইয়া ভালো।আপনি কেমন আছেন?
আমি-খুব একটা ভালোনা,তোমার বান্ধবী কই সকালে না রাস্তায় দেখলাম কলেজে আসার জন্য কই এখনো তো খোঁজ নাই।
নুসরাত-মিথিলা তো প্রাইভেট পড়ে বাসায় চলে গেছে ভাইয়া।
আমি-ও আচ্ছা তাহলে থাকো আমি আসছি আর কলেজে কোন প্রব্লেম হলে আমাকে জানাবা।
নুসরাত-ওকে ভাইয়া ধন্যবাদ।
-
ধুর ভাল্লাগেনা এত রাগ কেন করতে হবে।আজকে একটাও ক্লাস করিনি,ক্লাস রুমে বসে আছি।সাগর বললো দোস্ত মায়ার সাথে কথা বল না সব ঠিক করে দে প্লিজ।হুম চলেন আপনাকে উদ্ধার করে দেই।
তারপর মায়াকে ডাকলাম।
-
আমি-এই যে মায়া আপু শুনো।
মায়া-কি ভাইয়া বলেন।
আমি-(সাগর কে হাত ধরে টান দিয়ে বললাম কান ধর এখন আর বল সরি আর এমন ভুল করবিনা)মায়া আপু এর পর যদি এমন করে একদম ব্রেকাপ করে দিবা।
সাগর-অনেক পোলাপান আছে সবার সামনে কান ধরলে মজা নিবে তো।
মায়া-তুই এখানেই কান ধরবি নইতো আমার চোখের সামনে থেকে দূর হ।
আমি-হুম কান ধরে সরি বল।
অবশেষে সাগর কান ধরে সরি বললো।ওদের সবকিছু ঠিক হয়ে গেল।আচ্ছা তোরা তাহলে কথা বল আমার ভালোলাগছেনা বাসায় চলে গেলাম।ওদের কাছে থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
আম্মু-কিরে ২ টা বাজে সকালে তো কিছু খাইলি না এখন খেয়ে নে।
আমি-আম্মু ভালোলাগছেনা।
আম্মু-না খেয়ে থাকলে আবার গ্যাস্টিক এর সমস্যা হবে খেয়ে নে।
-
আম্মুর জোরাজোরি তে খেয়ে নিলাম তারপর মিথিলাকে কল দিলাম দেখি ওর ফোন এখন ও বন্ধ।তারপর একটু ঘুমালাম।
বিকেল ৫ টার সময় ঘুম থেকে উঠলাম।উঠে ফোন দিলাম এখন ও ফোন বন্ধ।কি যে করি,আরে মিথিলার আম্মুর নাম্বার তো আছে দেখি কল দেই।একটু ভয়ে ভয়ে ফোন দিলাম।
-
আমি-আসসালামু আলাইকুম,,,,আন্টি কেমন আছেন।
মিথিলার আম্মু-ওয়ালাইকুম আসসালাম,ভালো আছি।কে তুমি?
আমি-আন্টি আমি জয় মিথিলার ফ্রেন্ড,ওর ফোন বন্ধ তাই আপনার কাছে কল দিলাম।
মিথিলার আম্মু-বাবা ও তো এখন ঘুমাচ্ছে আমি ডেকে দিচ্ছি।
আমি- না থাক আন্টি আমি পরে কল দিচ্ছি।
মিথিলার আম্মু-আচ্ছা বাবা ঠিক আছে।
আমি-আচ্ছা আন্টি ভালো থাকবেন আসসালামু আলাইকুম,,,।
তারপর ফোন কেটে দিলাম বাসা থেকে বের হলাম সোহাগ কে বললাম চল মিথিলাদের বাড়ির ওইদিকে যাবো।তারপর আমি আর সোহাগ বাইক নিয়ে ওদের বাড়ির রাস্তায় গিয়ে থামলাম।
৭ টা বেজে গেছে প্রায় অন্ধকার।আমি মিথিলার আম্মুর নাম্বারে ফোন দিলাম।
আমি-হ্যালো।(মিথিলাই ফোন টা ধরছে)।
মিথিলা-কি হয়ছে তোমার ফোন দিছো কেন।
আমি-সরি সোনা পাখি আসলে সাগর আর মায়ার ঝগড়া হয়েছিল তাই কথা বলতেছিলাম তোমার সাথে কথা বলতে পারিনি।
মিথিলা-ভালো তো আমি কি করবো শুনি।
আমি-তোমার বাড়ির সামনে দাড়িয়ে আছি একটু জানালাটা খুলো অনেক দেখতে ইচ্ছা করছে
মিথিলা-পারবোনা আমি।
আমি-আচ্ছা তুমি জানালা না খুললে আমি ঢিল মারতেছি।
মিথিলা-মারো আমার কি।
সোহাগ একটা ঢিল দে তো।তারপর ঢিল মারলাম শব্দ হতেই মিথিলা জানালা খুললো।অনেক অভিমানের সুরে আমার দিকে তাকাতেই আমি কান ধরলাম বললাম সরি প্লিজ।মিথিলা শুনতে না পাইলেও বুঝতে পারছে কি বলছি।তারপর মেসেজ দিল।
মিথিলা-আচ্ছা এখন জাও কেও দেখলে সমস্যা হবে।
আমি-আচ্ছা তাহলে তোমার ফোন অন করো।
মিথিলা-আচ্ছা করতেছি।
আমি-আই লাভ ইউ সোনা পাখি।
মিথিলা-আই লাভ ইউ টু।এখন জাও আম্মু ডাকতেছে পরে কথা বলবো।
আমি-আচ্ছা জান ঠিক আছে বাই।
আমার শাশুড়ী আম্মা একটু প্রেম ও করতে দেইনা ডিস্টার্ব কেন করতে হবে।তারপর আমরা বাসায় চলে গেলাম।এখন অনেক ভালো লাগছে।পরীর মায়াবী মুখ টা দেখলে সব ভুলে যাই এক নিমিষেই।অনেক ভালোবাসি পরী টাকে।
রাতে খাবার খেয়ে মেসেজ দিলাম আমার পরী টাকে।
আমি-হাই কি করো পরী।
মিথিলা-এইতো খাবার খেয়ে শুয়ে পড়লাম মাত্রই।তুমি কি করো?
আমি-সেইম গো সোনা পাখি।
মিথিলা- তোমার উপরে এখনো একটু একটু রাগ আছে।
আমি-তাহলে এখন কি করতে হবে গো কলিজা।
মিথিলা-আমি জানিনা।
আমি-আচ্ছা আমার লক্ষী পরী টাকে একটু আদর করে দেই।
মিথিলা-লাগবেনা।
আমি-লাগবে জানি আচ্ছা দুইটা চুমু দিচ্ছি।উমমমমা,উমমমমমা রাগ কমছে এখন।
মিথিলা-হুম কমছে।
আমি-তাহলে কই আমাকে তো দিলানা।
মিথিলা-ইস আমি কেন দিবো তুমি তো দিলাই।
আমি-না দিলে তোমার বিয়ে হবেনা যাও।
মিথিলা-আচ্ছা দিচ্ছি উমমমমা।
আমি-আচ্ছা সোনা তোমার এত রাগ আমি জানতাম না।আমি কত কষ্ট পাইছি জানো তুমি।
মিথিলা-কি করবো আমাকে কেও ইগনোর করলে আমার প্রছুর রাগ হয়।
আমি-আচ্ছা আর ইগ্নোর করবো না।
মিথিলা-মনে থাকবে তো।
আমি-শুধু মনে থাকা নয় ডাইরিতে লিখেও রাখবো।
মিথিলা-পাগল।
আমি-পাগলী আমার বাবুর আম্মু হবা।
মিথিলা -বিয়ের আগে বাবু হলে মানুষ কি বলবে শুনি।
আমি-বিয়ের পরের কথাই বলছি।
মিথিলা-হুম হবো তো।
আমি-অনেক গুলা বেবি নিবো আমর ওকে।
মিথিলা- এ বললেই হলো দুইটার বেশি নিবোনা।
আমি-হুম প্রথমে আমাদের মেয়ে হবে ঠিক তোমার মত দেখতে।
মিথিলা-না ছেলে হবে তোমার মতো দেখতে।
আমি-না মেয়েই হবে।
মিথিলা-না ছেলেই হবে।
আমি-আচ্ছা ছেলেই হবে হ্যাপি।
মিথিলা-হুম ছেলে হোক বা মেয়ে যেইটা হবে সেইটাতেই হ্যাপি।
আমি-আমার লক্ষী বউটা।
মিথিলা-ইস আমার লজ্জা লাগে।
আমি-এত লজ্জা পাইলে বেবি হবেনা।
মিথিলা-আর এত রাত জাগলে ঘুম হবেনা আর সকালে উঠতেও পারবোনা দুজন।
আমি-হুম তাহলে ঘুমাতে হবে আচ্ছা তুমি কিন্তু আজকে আমার স্বপ্নে আসবা।
মিথিলা-পাগল একটা আচ্ছা জাবো।
আমি-আই লাভ ইউ বাবুর আম্মু।
মিথলা-আই লাভ ইউ টু বাবুর আব্বু।
আমি-উমমাহ গুড নাইট সোনাপাখি।আল্লাহ হাফেজ।
মিথিলা-উমমাহ গুড নাইট।আল্লাহ হাফেজ।
-
আহা প্রেম যে এতো মধুর হয় জানতাম না ইস আরো যদি আগে থেকে প্রেম করতাম ভালোই হতে।প্রেমে এতো সুখ কেনো।এত রাগ,অভিমান,ঝগড়া তারপরেও একটা সুখ আছে।,,,,,,,,,,,,,
-
চলবে....
-
আপনাদের যদি ভালোলেগে থাকে অবশ্যই জানাতে ভুলবেন না,যদি ভালো না ও লেগে থাকে জানাবেন প্লিজ,লাইক কমেন্ট দিয়ে সাথে থাকবেন।আপনাদের ভালোলাগার গুরুত্ব দিয়েই পরবর্তী পর্ব নিয়ে হাজির হবো।
-
ধন্যবাদ।