স্বার্থপর পরী গল্প ১২
স্বার্থপর পরী গল্প
পর্ব-১২(সমাপ্তি পর্ব)
আমি-আজকেও কি আপুর সাথে কথা বলছিলা।
মিথিলা-না মানে আম্মু,,,।
আমি-একদম চুপ থাক সত্যি বল কার সাথে কথা বলছিলি কালকে তোর আপু বলছে তোর আম্মু কথা বলেনি তার সাথে।
মিথিলা-আসলে জিহাদ,,,,
আমি-জিহাদ কি ভালো করে বল নাহলে তোর খবর আছে(প্রছুর রেগে গিয়ে)
মিথিলা-জিহাদ ফোন দিছিলো তাই ওর সাথেই কথা বললাম(জিহাদ মিথিলার এক্স বয়ফ্রেন্ড)।
আমি-ও তো ওর সাথে এতখন কিসের কথা তোমার?
মিথিলা-অনেক কষ্টের কথা বলছিলো(নরম করে বললো)।
আমি-ও একটা কথা বলি?
মিথিলা-কি বলো।
আমি-সত্যি বলবা তো।
মিথিলা-হুম বলো।
আমি-আচ্ছা ওই ছেলেকে কি তুমি এখনো ভালোবাসো সত্যি বলবা মন থেকে।
মিথিলা-আসলে ওই ছেলে আমার জীবনে ফাস্ট ছিলো এখনো ভুলতে পারিনি।তুমি বললে আর কথা বলবোনা।
আমি-আরে না তুমি তো আমাকে ভালোবাসো না ওই ছেলের সাথে রিলেশন কন্টিনিউ করো।
মিথিলা-সত্যি তুমি কষ্ট পাবানা তো।
আমি-হাহাহা আরে না।
মিথিলা-আচ্ছা তাহলে আমরা ফ্রেন্ড হয়ে থাকবো।
আমি-আজকের পর থেকে আর কথা হবেনা আমাদের তুমি তোমার বি এফ কে নিয়ে সুখে থাকো।
মিথিলা-কিন্তু প্রব্লেম কি,,৷
-
ফোন কেটে দিলাম ভাবতেছি কার জন্য কি করলাম।এত সুন্দর একটা লাইফ ছিলো,ভালো স্টুডেন্ট ছিলাম আর এখন স্টাডির টাইম ও পাইনা,সারাদিন ব্যস্ত থাকতাম আর পরী টাকে ভাবতাম সব কিছু ভালো লাগতো এখন কি হবে।
জানেন খারাপ লাগছিল বেশি কেনো।
মিথিলা একটা বার বলতে পারতো ওকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো কিনা।ওর জন্য এতকিছু করা ও বল্লেও পারতো আমাকে ছাড়বেনা,আমি বলতেই ও সিম্পল ভাবে সব শেষ করে দিলো।স্বার্থপর সত্যিই অনেক একটা বার ও ভাবলো না আমার কথা।
অনেক কষ্ট হচ্ছিল ফোনটা ওফ করে বাসা থেকে বের হলাম সোহাগ কে সাথে নিলাম বললাম এক প্যাকেট সিগারেট আনতে।
একটার পর একটা সিগেরেট জালাচ্ছি খুব কষ্ট হচ্ছিলো।চোখ দিয়ে পানি বের হচ্ছিল।সোহাগ অবাক হয়ে দেখতেছে শুধু।
সোহাগ-কি হয়ছে তুই না সিগারেট ছেড়ে দিছিলি।
আমি-চুপ থাক কিছু জিজ্ঞেস করবিনা আমার ভালো লাগছেনা কিছু।
তারপর সারারাত না ঘুমিয়ে পার করে দিলাম।
কলেজে গেলাম কাজ ছিল।মিথিলা অনেক কথা বলার চেষ্টা করছে আমি কোন কথা বলিনি।
কিন্তু বাসায় আসার টাইমে একি সি এন জি তে উঠে।আমি নেমে জাচ্ছিলাম কিন্তু ও আমার হাত চেপে ধরে অনেক রিকুয়েস্ট করে।মনে মনে ভাবলাম হয়তো বলবে আমি শুধু তোমারই হবো।
-
মিথিলা-কি ভাবছো।
আমি-কিছুনা,কি বলবা বলো।
মিথিল-তুমি কিছু খাওনি বিস্কুট আর কোক খেয়ে নাও আগে।
আমি-না কিছু খাবোনা খুদা নাই।
মিথিল-এই নাও।(জোর করে মুখে তুলে দিল)।
আমি-খাবোনা কি হয়ছে বলো।
মিথিলা-আমি জিহাদ কে অনেক ভালোবাসি তুমি আমাকে মাফ করে দাও।
আমি-তোমার সাথে কথা বলার কোন ইচ্ছা নাই(বিস্কুট দিতেছিল মুখে আমি ফেলে দিলাম)
-
তারপর আর কথা বলিনি গাড়ি থেকে নামলাম বাজারে বসে একটা সিগেরেট জালালাম।
মিথিলার বি এফ জিহাদ আমাদের ফলো করছিলো আমার ফ্রেন্ডের কাছে মারার হুমকি দেয়।আমার ফ্রেন্ড বলছে তুই যে মারতে চাইছিস ও শুনলে তোর অবস্থা খারাপ করে দিবে।
পরে ওই ছেলে চলে যায়।আমার ফ্রেন্ড সাগর আমাকে সব বলে।
তারপর বিকেলে আমি জিহাদ এর নাম্বার মেনেজ করলাম।এবং কল দিলাম।
আমি-আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া আমি জয় একটু পর বাজারে এসে আমার সাথে দেখা করবা।
জিহাদ-কেনো ভাইয়া আমি দেখা করতে পারবোনা।
আমি-আমি যদি তোমার সাথে দেখা করি তাহলে প্রবলেম হবে আচ্ছা আমি জাচ্ছি তোমাদের এলাকায়।
জিহাদ-না ভাইয়া আমি আসতেছি।
আমি-আচ্ছা ৬ টার মধো এসে ফোন দিবা।
তারপর ছেলেটা আসল।
আমি-ভাইয়া এখানে অনেক লোকজন চিপায় চলো।
জিহাদ-এখানেই বলেন।(ভয় পাইছে অনেক)
আমি-আরে না তুমি ভয় পেয়ো না চলো।
তারপর একটু নিরিবিলি জায়গায় আসলাম বললাম এখন আমাকে মারো মারতে চাইছিলে না।
জিহাদ-কি বলেন ভাই না বুঝে বলে ফেলছি আর মিথিলা কি আমার বউ নাকি বোন ওর জন্য এসব করতে হবে।
আমি-মেয়েটা তোমাকে অনেক ভালোবাসে খুব কপাল ভালো তোমার।
-
তারপর বেশি কথা বললাম না ফ্রেন্ড রা অনেক মারতে চাইছিল কিন্তু আমি একটা হাত ও দিতে দেইনি।কারন মিথিলা অনেক কষ্ট পাবে জানার পর।
রাত ৯ টার দিকে মিথিলার কল আসল।
মিথিলা-তুমি কি চাওনা আমি ভালো থাকি।
আমি-তোমার ভালোর জন্যই তো এতকিছু তুমি তো বোঝনি আমাকে।
মিথিলা-তুই আমার বিএফ কে কি বলছিস,ওরে নাকি মারতে চাইছিস আরো অনেক কথা বলছিস।
আমি-আরে এমন কিছু তো হয়নি।
মিথিলা-আমাদের বিয়ের কথা চলছে জিহাদ এখন বিয়ে করতে চাইছেনা আমি সুইসাইড করবো তুই যদি এমন করিস।
আমি-আরে আমি কি করলাম।
-
মিথিলা কল কেটে দিল।কল দিলাম ফোন অফ পাইলাম।হায়রে মেয়ে মানুষ তোরা এত বুঝস কেনো।জার জন্য এতকিছু করলাম সেই এখন বিশ্বাস করেনা,আবার আমার জন্য সুইসাইড করবে আমি নাকি সমস্যা এখন।
অনেক কান্না করলাম কিছু ভালো লাগলোনা।
পরের দিন জিহাদ মিথিলার বি এফ কে কল দিলাম দিয়ে বিকেলে কথা বলতে চাইলাম দেখা করার জন্য অনেক বলার পর রাজি করালাম।
আর এই কয়েকদিনেই ওদের বিয়ের ব্যপারে ক্লিয়ার হলাম মিথিলার বাসার কাছে একটা ফ্রেন্ডের কাছে।ঘুরতে গেছিলো আসতে লেইট হয়ে গেছিলো তাই অই ছেলের বাবা সন্ধার দিকে রেখে জাই মিথিলার বাসায় এই সুবাদেই বিয়ে আরকি।
বিকেলে জিহাদ আসল।
আমি-তুমি নাকি মিথলাকে বিয়ে করবাবা।
জিহাদ-ওর মত ফালতু মেয়েকে কে বিয়ে করবে,আপনার মত কত বিএফ আছে কে জানে।
আমি-দেখো জিহাদ মিথিলা ফালতু না তোমাকে অনেক ভালোবাসে,আমরা জাস্ট বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলাম আজকের পর থেকে আর কথা বলবোনা আমি মিথিলার সাথে(জিহাদের হাত চেপে ধরে বললাম)
জিহাদ-তোর কথায় কেনো বিয়ে করবো।
(আমি কিন্তু ছেলেটার সিনিয়র বাট তুই করে বলছে অনেক কষ্টে রাগ চেক দিলাম)
আমি-আমার কথায় না তবে এইটুকু বলতে পারি অনেক ভালো মেয়ে মিথিলা আর তোমাকে অনেক ভালোবাসে তুমি বিয়ে করে নাও ভাইয়া।
-
তারপর অনেক বোঝানোর পর রাজি হলো জিহাদ।
আমি আর মিথিলার সাথে কোন কন্টাক্ট করিনি।দিন গুলো যে কিভাবে জাচ্ছে আমার খুব খারাপ লাগছে,প্রছুর সিগারেট খাই এখন,ঠিক মতো খাবার খাইনা,ব্যবসাতেও মনোযোগ নাই।
৫ দিন পর মিথিলার হঠাৎ মেসেজ।এবং শেষ কথা।
-
আজকে আমার বিয়ে দোয়া কইরো আমারা যেনো সুখে থাকি।
-
আমি মেসেজ টা দেখেই ফোন টা একটা আছাড় দেই। আর অনেক কান্না করি।আমার মাথায় কিছু কাজ করছেনা আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি।কি দোষ ছিলো আমার ভালোবাসা তো নিঃস্বার্থ ছিল।কি করলাম না ওর জন্য,যাকে সারাজীবন ধরে রাখার জন্য এতকিছু করলাম আর সে আমাকেই ছেড়ে দিল।হায়রে ভালোবাসা।
সন্ধার দিকে জানতে পারি আমার পরীটার বিয়ে হয়ে গেছে।আমার সবকিছু এলোমেলো লাগতেছিল অনেক নেশা করি তারপর ১০ টা ঘুমের ওষুধ নিয়ে রাতে বাসায় এসে রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলাম।আম্মু খাবার খাওয়ার জন্য ডাকতেছিল বলছি খাইছি খুদা নাই।এতো স্বপ্ন দেখছিলাম জাকে নিয়ে সে এখন অন্যর বউ অন্যর সাথে বাসর করবে নিজের ভালোলাগার মানুষ যখন হারিয়ে জাই কিযে কষ্ট লাগে আজকে বুঝতেছি।৩ বছর ধরে ভালোবাসি যাকে পাওয়ার জন্য পড়ালেখার ক্ষতি করে ব্যবসা শুরু করলাম।আজকে সেই আর আমার নাই এখন অন্য কারো।আমি কিছুতেই মানতে পারছিনা।অনেক সিগেরেট খাচ্ছি ঘুমের ওষুধ ১০ টাই খুললাম একে একে সব গুলো খেয়ে ফেললাম।তবুও কষ্ট লাগছে বুকের মধ্যে।আস্তে আস্তে শরীর টা নিস্তেজ হয়ে আসল হারিয়ে গেলাম ঘুমের দেশে।এখন শুধু এইটাই জানি আমার পরী আর আমার নেই স্বার্থপর পরী আমার।
-
সমাপ্ত।
...
Note: কাওকে আশা দিয়ে নিরাশ করবেন না।ভালোবাসলে একজন কেই বাসবেন।লাইফে পাস্ট বলতে কোন কিছু রাখবেন না ডিলেট করে দিবেন।এমন কিছু করবেন না যার জন্য একটা জীবন নষ্ট হয়ে যাবে। যে বিশ্বাস করে তার বিশ্বস্ত হয়ে থাকার চেষ্টা করবেন।আর শেষ একটি কথা কাওকে কষ্ট দিয়ে সুখি হওয়া যাইনা আপনি কাঁদাবেন আপনার ও একদিন কাঁদতে হবে।
-
আপনাদের যদি ভালোলেগে থাকে অবশ্যই জানাতে ভুলবেন না,যদি ভালো না ও লেগে থাকে জানাবেন প্লিজ,লাইক কমেন্ট দিয়ে সাথে থাকবেন।আপনাদের ভালোলাগার গুরুত্ব দিয়েই পরবর্তী গল্প নিয়ে হাজির হবো।
-
ধন্যবাদ।