অদ্ভুত_প্রেম_কাহিনি ২

 

অদ্ভুত_প্রেম_কাহিনি ২


পর্ব  ২

আমি ছেড়ে দাড়াতেই দেখি 

আমার সামনে আমার আব্বু দাঁড়িয়ে আছে 

তার মানে আমি

আমার আব্বুকে জড়িয়ে ধরে ছিলাম 

কিন্তু আব্বু এখানে কখন এলো 

আমি কিছু বলার আগেই

আব্বুঃ নিশা বাসায় চলো 

আনিসা মা তুমি ও আসো 

আমাদের সাথে 

এই বলে আব্বু আমাদের বাসায় নিয়ে এলো 

আমি যে আব্বু কে কিছু বলব তার আগেই 

উনি আমাকে 

বাসায় নিয়ে আসে

আমি আর আনিসা বাসায় এসে 

অনেকটা অবাক 

আমাদের 

বাসাটায় যেন আজ সাজ সাজ রব পরেছে 

আমার মা, চাচিরা সবাই খুব ব্যাস্ত কাজে 

মনে হচ্ছে 

বাসায় যেন কোন অনুষ্ঠান হবে 

কিন্তু কিসের 

আজ তো আমাদের দুই বোনের একজনের ও জন্মদিন 

অথবা

আম্মু আব্বুর বিবাহ বাষিকি ও না 

তবে 

এত কিছু কিসের জন্য 

আজ সকাল  পযন্ত তো সব নরমাল ছিল 

হঠাৎ 

কি হল 

আর আব্বু আমাকে এই ভাবে নিয়ে এলেন কেন?

আমি আর কিছু না

ভেবেই আম্মুর কাছে গেলাম 

যেয়ে দেখি 

আম্মু রান্না কাজে অনেক ব্যস্ত 

আমিঃ আম্মু বাসায় কি কিছু হবে 

এত আয়োজন কেন?

আম্মুঃ তুই এসে পড়েছিস 

নিলুফা 

এই নিলুফা নিশাকে নিয়ে যাও 

ও এসে পরেছে 

আমিঃ আম্মু কাকি আমাকে কই নিয়ে যাবে?

নিলুফাঃ সব কথা পড়ে শুনো আগে চলো 

আমার সাথে

এই বলে কাকি আমাকে একপ্রকার টেনে নিয়ে গেলেন 

আর 

আমার পিছন পিছন আনিসা ও আসলো 

কাকি আমাকে রুমে নিয়ে আসতেই 

কাকি সানজিন কে ডাক দেয় 

হলুদ নিয়ে আসার জন্য 

আমি কাকির কথা শুনে অনেকটা অবাক 

সানজিন হলুদ আনবে কেন কাকি

কাকিঃ তুমি চুপচাপ বসে থাকো 

আর তখনি সানজিন হলুদের বাটি নিয়ে উপস্থিত

কাকি সানজিনের কাছ থেকে হলুদের বাটি নিয়ে

আমার হাত পায়ে হলুদ মাখা শুরু করলো 

কাকিঃ আরে আনিসা তুমি বসে আছো কেন 

তোমার বান্ধুবিকে হলুদ লাগিয়ে দাও

আনিসা কাকির কথা মত আমাকে হলুদ লাগানো শুরু করলো 

মা কাকিদের এ সব কাজ আমার 

মাথার উপর দিয়ে 

যাচ্ছিল 

সবাই কে কত বার যে জিজ্ঞেস করলাম কিন্তু করো মনে হয় আর 

উত্তর দেয়ার মত সময় ছিল না হাতে 

হলুদ মাখানো শেষ হতেই 

কাকি আমাকে গোসলে পাঠালেন

আমাকে এক প্রকার জোড় করে গোসল করানো হলো 

গোসল শেষে 

ওয়ারুম থেকে বের হতেই দেখি 

দাদি

বিছানায় বসে আছে 

আমি দাদির কাছে যেতেই দেখি 

দাদি

সাথে 

একটা নীল বেনারসি কাতান শাড়ি আর কিছু গয়না

নিয়ে বসে আছে

আমি এসব দেখে অনেকটা হতবাক হয়ে গেলাম 

সব কিছু বুঝার আগেই 

দাদিঃ নিশা দাদু 

এই শাড়ি আর গয়না গুলো পড়ে রেডি হয়ে নে তো দাদুন 

আমিঃ এই শাড়ি আর গয়না কেন পরব দাদু 

কি হচ্ছে কি 

সব কিছু যেন আজ আমার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে

আমাকে একটু বুঝিয়ে বলবা একটু! 

দাদিঃ শুনো আমার নাতনির কথা 

তুই জানিস না নাকি কিছু দাদুন আমার?

আমিঃ না! 

দাদিঃ আরে আমার দিভাই আজ তোমার বিয়ে

তাই তো এত কিছু করা হচ্ছে 

আমিঃ কি বিয়ে? 

তাও আবার এমন হঠাৎ করে 

কখন হলো এই সব 

আমাকে কিছু জানাও নি কেন তোমরা? 

দাদিঃ ওওসব কথা পড়ে 

আগে তৈরি হয়ে নাও তো বর যাত্রা এখনি এসে পড়বে 

যে দি ভাই।

আমি এই বিয়ে করব না 

বললেই হল আজ আমার বিয়ে 

আমি জানি না শুনি না এমন একটা লোক কে বিয়ে করব না দাদু😔(আমি)

আর তখনি 

তোমার ইচ্ছা এখানে জানতে চাওয়া হয় নি নিশা 

যা বলা হচ্ছে 

তেমন ভাবে তৈরি হয়ে নাও ( আব্বু)

আমিঃ আব্বু তুমি তো............. 

আমার কথাটা পুরো করার আগেই

আব্বুঃ নিশা তুমি জানো আমার মুখের উপর কথা বলা একদম পছন্দ না 

যা বলেছি চুপ চাপ কর

এই বলে আব্বু চলে গেল 

আম্মু তখন রুমে আসলো 

আম্মু ঃ নিশা মা আমরা যা করছি তোর ভালোর জন্যই করছি রে মা 

তুই আর অমত করিস না 

ছেলে টা অনেক ভালো 

দেখবি তোকে অনেক সুখে রাখবে 

আমি আম্মুর কথা গুলো শুনছিলাম 

আর 

এক দিকে অনবরত আমার চোখ দিয়ে অনবরত নোনা জল ফেলছিলাম 

আসলে আজ আমার দেখা সকালের স্বপ্নটা কাল স্বপ্ন ছিল 

তাই তো আজ আমার জীবনটা পুরো ওলট পালট করে দিল

আম্মু দাদি আমাকে বুঝিয়ে চলে গেল 

আনিসা আর সানজিন মিলে আমাকে শাড়ি আর গয়না গুলো 

পড়িয়ে 

সাজিয়ে দিল 

আমি শুধু সং সেজে বসে রইলাম 

আজ যেন আমার মধ্যে কোন তেজ খুজে পাচ্ছি না 

আমাকে সাজানো শেষে 

সানজিনঃ আপু তুই মন খারাপ করিস না 

তোকে এমন ভাবে দেখতে ভালো লাগে না 

আমি সানজিনের কথা শুনে 

ওর দিকে শুধু তাকিয়ে ছিলাম 

কথা বলার যেন আজ আমার শক্তি টুকু ও হারিয়ে ফেলেছি আমি

কিছুক্ষন পর 

আম্মু এসে আমাকে 

বিয়ের আসরে নিয়ে গেল 

আর আমাকে এক অজানা লোকের সাথে দাড় করিয়ে দিল 

কিছুক্ষন পর কাজি এসে 

বিয়ে পড়ানো শুরু করলো 

কাজি কি সব বলছিল আমার মাথায় তখন কিছুই ঢুকছিল না 

শুধু এইটুকু মাথায় ঘরছিল 

যে আব্বু আম্মু আমাকে একদম পড় করে দিল আমার স্বপ্ন গুলো  থেকে 

যথাক্রমে বিয়ে সম্পন্ন হলো 

এখন বিদায় এর পালা 

আম্মু দাদি আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছিল 

কিন্তু 

আমার মনে যেন এক ঘুমোট বেধে আছে যার জন্য 

আমার নোনা জল গুলো বের হচ্ছিল না 

কিন্তু যখন সানজিন আর আনিসা আমাকে জড়িয়ে ধরে ছিল 

তখন যেন আমার মনের ভেতর টা নড়ে গিয়ে ছিল 

আব্বু বরের হাতে আমার হাত দিয়ে 

আব্বুঃ বাবা এই হলো আমার জীবনের সব থেকে বড় ধন যা আজ আমি তোমাকে দিলাম 

তুমি আমার এই কলিজার টুকরো দেখে রেখো 

ওর কোন ক্ষতি হতে দিও না নিহাল বাবাজি🙁

নিহালঃজ্বী অবশ্যই

আব্বু যখন এই কথা গুলো বলছিল 

আমি আব্বুর দিকে তাকাতেই দেখি আমার বাবার চোখ  নোনা জল দিয়ে ভিজে আছে 

যা দেখে আমার মনের সব ঘুমোট ভাবটা চলে গেল 

বিদায় নিয়ে 

গাড়ি রওনা দিল 

যথা সময়ে গাড়ি তার গন্তব্য স্থলে চলা শুরু করলো 

মাঝে একটু গাড়ি থামে বিশ্রাম নেয়ার জন্য

আর তখনি 

নিহালঃ নিশা তোমার কিছু লাগবে 

আমি চুপ চাপ বসে রইলাম 

কোন উত্তর দিলাম না 

নিহালঃ কিছু লাগলে আমাকে ঢাক দিয়ো 

এই বলে লোকটা চলে গেল 

ওই দিকে.....নিহাল

 জ্বি স্যার সব এখন সব আমাদের কন্ট্রোল এ আছে

 সব দিক দিয়ে কান খোলা রেখো

ওর যেন কিছু না হয় নিহাল 

 অবশ্যই স্যার

আচ্ছে বাই

এই বলে নিহাল তার ফোন কেটে দিল...

............

চলবে........

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url