রাগী_টিচার_যখন_রোমান্টিক_হাসবেন্ড ৭
ক্লাস রুমে চুপচাপ বসে আছে শখ।এটা কেনো জানি এটা সবার সয্য হচ্ছে না।
আয়েশা:কি হয়েছে শখ সোনা।আজ তুই এত চুপচাপ কেনো।কোনো সমস্যা।
শখ:আজকে আমার মন ভালো নেই।
আমান:কেনো তোর আবার কি হলো।
মেধা:তোর আবার মন আছে।কই আগে তো জানতাম না।
স্নেহ:আমি'ও তাই বলি।ওর আবার মন'ও আছে।মন আবার খারাপ'ও হয় নাকি।
বলেই সবাই হেসে দিলো।
শখ:তোদের সাথে কথা বলাই বেকার। এর থেকে ভালো রাস্তার কুত্তার সাথে কথা বলা।তা-ও আমার কথা চুপচাপ শুনে বসে থাকবে।
সবাই একসাথে বলে উঠলো কি তুই আমাদের কুকুরের সাথে তুলনা করলি।
--তো কিসের সাথে করবো আলিয়া ভাট এর সাথে নাকি।এক একেকজন কুত্তা বিলাই এর মতো দেখতে।
--তুই কিরে শেওড়া গাছের পেতনীর মতো দেখতে।আবার আমাদের বলিস।
--আমি যথেষ্ট সুন্দর।আমি হাজারো ছেলের রাতের ঘুম হারাম করতে পারি।
--ঐ জন্য-ই বললাম তুই শেওড়া গাছের পেতনী। তাই তোকে দেখে হাজার'ও ছেলের রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়।যে ভয়ানক চেহারা বাবা রে বাবা।বললো কাব্য।
শখ অগ্নি দৃষ্টি নিয়ে কাব্যের দিকে তাকিয়ে। কাব্য মানে মানে কেটে পড়লো।শখ যখনি কাব্যের কাছে যাবে।তখনি বেল পড়ে যাওয়া'য় আয়ান ক্লাস রুমে আসে।
একটা মেয়ে ঠোঁটে লিপস্টিক দিচ্ছিলো।আয়ান যে কখন রুমে প্রবেশ করছে। সে,দিকে কোনো খেয়াল নেই মেয়েটির। নিজের কাজে আপন মনে ব্যস্ত।আয়ান এবার রেগে মেয়েটিকে বললো।
--এই যে আপনি। উঠুন উঠে দাড়ান।
মেয়েটি বসে কাঁপা কাঁপা গলায় বল্লো আমাকে বলছেন স্যার।
--জ্বী আমি আপনাকে'ই বলছি।বলছি এটা পড়াশোনা করার জায়গা বিউটি পার্লার নয়।যে আপনি ক্লাস টাইমে সাজসয্যা করবেন।সাজার জন্য আরো অনেক জায়গা আছে। আপনার বাসা আছে।কমন রুম আছে।বাহিরে মাঠ আছে।অনেকটা রেগে-ই বললো আয়ান।
--মাগার স্যার ঐখানে তো আপনি নাই। আপনি তো পুরাই একটা জিনিস যাকে বলে আগুন।স্যার আমি আপনাকে ভালোবাসি। আপনাকে বিয়ে করতে চাই। আপনি কি আমাকে বিয়ে করবেন স্যার।মেয়েটির এমন কথায় পুরো ক্লাসে হাসির রোল পড়ে গেছে।
আপমানে আয়ানের রাগ যেনো মাথায় চরে বসলো।কিছুতে'ই নিজেকে শান্ত করছে পারছে না।রেগে গিয়ে মেয়েটির গালে কষে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো।
--এখানে পড়াশোনা করতে আসছো নাকি ফাজলামি করতে আসছো।তোমার সাহস কি করে হয় এমন বেয়াদবি করার পুরো ক্লাসের সামনে।চেচিয়ে বললো কথা গুলো আয়ান।
আয়ানের চিৎকারে পুরো ক্লাস স্তব্ধ হয়ে গেছে। কারো মুখে কোনো কথা নেই। মনে হয় সবাই বোবা কেউ কথা বলতে পারে না।
--এই মেয়ে বেড় হন।আপনি যা করেছেন তার শাস্তি তো আপনাকে পেতেই হবে।
মেয়েটির আর কোনো কথা না বলে ভয়ে চুপচাপ বেড় হলো।
--কান ধরে পুরো মাঠ তুৃমি ঘুড়বে।আর বলবে স্যারের সাথে বেয়াদবি করার জন্য আমি আমার শাস্তি পাচ্ছি। তোমরা কেউ আমার মতো স্যারের সাথে বেয়াদবি করবে না।স্যারের মনে কষ্ট দিবে না।স্যারের অসন্মান হয় এমন কোনো কাজ করবে না।যদি কেউ স্যারের সাথে বেয়াদবি করার চেষ্টা করতে চাও।এসব চিন্তা ভাবনা মন থেকে ঝেড়ে ফেলে দাও।নাহলে আমার মতো তোমরা'ও শাস্তি পাবে।
মেয়েটি কান্না করতে করতে বললো।
--সরি স্যার আমার ভুল হয়ে গেছে আমি আর এমন করবো না।প্লিজ আমাকে মাফ করে দিন।
--আমি তোমার থেকে অজুহাত শুনতে চেয়েছি।তুমি এমনিতেই আজ আমার ক্লাসের মূল্যবান সময় নষ্ট করে দিয়েছো।আমি এক কথা বার বার বলতে পছন্দ করি না। তাই আমাকে এমন কিছু করতে বাধ্য করো না।রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে আয়ান মেয়েটাকে খালি তুমি করে বলে ফেলছে।
মেয়েটি ভয়ে আর কোনো কথা না বলে।কান ধরে বাহিরে চলে গেলো।ক্লাসের সবাই যেতে চাইলে আয়ান রেগে বলে দেয়।
--আমার ক্লাসের সময় শেষ না হওয়া পর্যন্ত যদি কেউ রুমের বাহিরে প্রবেশ করেছো তাহলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না।আমি আর তোমাদের ক্লাস-ই নিব না।বলেই আয়ান মেয়েটির দিকে গেলো।
আয়ানের কথায় সবাই ভয়ে আর বাহিরে গেলো না।কিন্তু মনকে বোঝায় করে সে তো বাহিরে যাওয়ার জন্য ছটফট করছে।
--বাপ রে ভাগ্গিস আমি কিছু বলি নাই। তা না হলে আজ আমার'ও এই অবস্থা হতো রে শখ।বলল মেধা।
--হিহিহি তুই ও একটু বল তাহলে স্যার তোকে-ও ঐ মেয়েটার মতো অবস্থা করবে।
পুরো কলেজের সবার নজর এখন মেয়েটার দিকে।আয়ানের বলা কথা গুলো বলছে আর পুরো মাঠ কান ধরে ঘুরছে।
কয়েকজন এসে বলাবলি শুরু করলো।
--কিরে কি হয়েছে স্যার মেয়েটাকে এভাবে শাস্তি দিচ্ছে কেনো।
--আরে আর বলিস না।মেয়েটা স্যারকে সবার সামনে প্রপোজ করছে।আবার স্যারকে আগুন বলছে।বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে। জানিস-ই তো স্যার কতো রাগি এসব একদম পছন্দ করে না। তার ওপের সবার সামনে বলছে।ক্লাসের সবাই হাসাহাসি করছে।স্যারের কতো বড় অপমান হলো বলতো।
--ভাইরে ভাই স্যারকে তো আমি'ও পছন্দ করে ভাবছিলাম প্রপোজ করবো।আজকে যা দেখলাম। আমি আর স্যারের ধারে'ও যাব না।
--মেয়েটা আসলেই কাজটা ঠিক করে নাই। স্যারকে যখন এতোই পছন্দ।তাহলে স্যারকে একা আলাদা ভাবে বলতে পারতো।
--ভালো হয়েছে বলছে।একা বললে স্যার ওকে বকা দিতো সবকিছু সমাধান হয়ে যেতো।সবার সামনে বলছে দেখে মেয়েটার কি অবস্থা করেছে স্যার।আমরা তো সতর্ক হয়ে গেলাম।
--শুন স্যারকে দোষ দিবি না।স্যার ওনার জায়গা থেকে ঠিকি আছে।এটা পড়াশোনা করার জায়গা প্রেম ভালোবাসা করার জায়গা না।তাই স্যার মেয়েটিকে একদম উচিৎ শিক্ষা দিয়েছে।
--হয়েছে স্যার ভক্ত ছাত্রী। আর আপনাকে জ্ঞান দিতে হবে না।স্যার ঐ মেয়েকে ফিরিয়ে দিলে-ও আমাকে দিবে না।আমি ঐ মেয়ের থেকে বেশ সুন্দরী। আর পড়াশোনায়'ও অনেক ভালো।
--স্যার তোকে জীবনে'ও বিয়ে করবে না।কোথায় স্যার কোথায় তুই। বামন হয়ে চাঁদে হাত বাড়াতে চাস নাকি।
--তুই চুপ থাক একদম কথা বলবি না।স্যার শুধু আমার।
--তোদের লজ্জা নেই। বলতে হবে এতকিছুর পরেও স্যারের পিছে পড়ে আছিস।
তখনই আয়ান যাচ্ছিলো ক্লাসের দিকে।
--আপনাদের ক্লাস নেই। এখানে দাড়িয়ে আছেন কেনো।কোন স্যারের ক্লাস এখন।নাম বলেন।আমি স্যারকে পাঠিয়ে দিচ্ছি।কিছুটা রেগে বললো আয়ান।
সবাই ভয়ে যে যার ক্লাসে চলে গেলো।একটু পরে মেয়েটির।বাবা মা আসলো।আয়ানকে ডেকে পাঠালে আয়ান মেয়েটির বাবা মায়ের কাছে গেলো।মেয়েটির বাবা আয়ানকে বললো।
--তোমার সাহস হয় কি করে আমার মেয়েকে পুরো কলেজের সামনে অপমানকরার জানো আমি চাইলে তোমার কি কি করতে পারি।
--আপনার যা করার করে নিন আপনি।আপনার মেয়ে অপরাধ করছে আমি তাকে তার শাস্তি দিয়েছি।
--আবার কথা বলছো তুমি।আমি যদি তোমার চাকরি না খেয়েছি তাহলে আমার নাম'ও রিনি মজুমদার না।
--আমি'ও দেখতে চাই।আপনাদের কতটা ক্ষমতা।পারলে আমাকে এই কলেজ থেকে বেড় করে দেখান।আমি আয়ান চৌধুরী যতোদিন না এই কলেজে থেকে নিজে অবসর নিচ্ছি ততদিন কেউ আমাকে বেড় করতে পারবে না।একে তো আপনার মেয়ে অন্যায় করছে।সেটা তো জানতে চান-ই নাই। আবার বড় বড় কথা বলছেন।মেয়েকে কলেজে প্রেম ভালোবাসা করার জন্য পাঠিয়েছেন।
--প্রেম ভালোবাসা মানে।বলল মেয়েটির বাবা।
--ভালো লাগতেই পারে তাই বলে তুমি এমন করবে।ভালো করে বুঝিয়ে বলতে পারতে।বলল মেয়েটির মা।
--আপনার মেয়ে অবুঝ নয়।
যথেষ্ট বড় হয়েছে জ্ঞান হয়েছে।ও আমাকে বলে আমি নাকি আগুন।আমাকে ভালোবাসে বিয়ে করতে চাই। কথাটা আমাকে আলাদা করে বলতে পারতো আমি বকা দিয়ে বুঝিয়ে বলে ছেড়ে দিতাম।ও কি করেছে পুরো ক্লাসের সামনে বলেছে সবাই আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করছে।কত বাজে বাজে কথা বলছে।নিজের মেয়ের সন্মানের দিকটা দেখলেন।আমি এই কলেজের টিচার।আমাকে প্রতিদিন আমার ছাত্রছাত্রীদের পড়াতে হয়।ওর জন্য আজ আমি সবার সামনে অপমানিত হয়েছি।আজ যদি আপনার মেয়েকে ছেড়ে দিতাম তাহলে ওর দেখে আরো এমন অনেকেই করতো। কিন্তু এখন করার আগে দশবার ভাব্বে।
আয়ানের কথা শেষ না হতেই মেয়েটির বাবা মেয়েটির গালে থা/প্প/ড় বসিয়ে দিলো।
--তোমাকে আমি এসব করতে কলেজে পাঠাই।আজ তুমি বাসায় চলো।তোমার আছে।
--তুমি মেয়েটাকে মা/র/ছো কেনো। ছোট বাচ্চা ভুল করে ফেলছে।বুঝিয়ে বললেই তো হয়।
--তুমি চুপ থাকো।তোমার জন্য মেয়েটা আমার এমন হয়ে গেছে। আজ তোমার'ও আছে বাসায় চলো আগে।বলেই আয়ানের কাছে মাফ চেয়ে নিলো।তারপরে মেয়েকে টা/নতে টা/নতে নিয়ে চলে গেলো লোকটি।মেয়েটির মা'ও পেছনে পেছনে চলে গেলো।
চলবে......